ঐতিহ্য মন্ডিত পাহাড়, নদী, অরণ্য ঘেরা প্রাকৃতিক রূপ বৈচিত্র ঘেরা সমৃদ্ধ এই রাউজান। যেখানে জন্ম গ্রহণ করেন মাষ্টার দা সূর্যসেন, কবি নবীন সেন, কবি দৌলত কাজীর মতো বহু জ্ঞানী গুণী মানুষ। তাঁদের মতো ১৯০০ খ্রীষ্টাব্দের ১ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন আর এক কর্মযোগী মহাপুরুষ যাঁর নাম নূতন চন্দ্র সিংহ। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয়েছিল বলে খুব অল্প বয়সে তাঁকে লিপ্ত হতে হয়েছিল নানাবিধ জীবন সংগ্রামে। শিক্ষা-দীক্ষার কোন সুযোগ তিনি পাননি। এক সময় ঠাঁই হয়েছিল অনাথ আশ্রমে। এক পর্যায়ে এসে পিতৃহীন এই কিশোরকে ভাগ্য পরির্বতনের আশায় পাড়ি জমাতে হয়েছিল সুদূর আকিয়াবে, কিন্তু ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় তাঁর কষ্ঠার্জিত সব সহায় সম্বল ফেলে চলে আসতে হয়েছিল নিজ দেশে গড়ে তুলেছিলেন কুণ্ডেশ্বরী আর্য়ুবেদ ঔষধালয়। স্ত্রী, তিন পুত্র, এক কন্যা সন্তান ও বহু আত্মীয় স্বজনে ভরপূর ছিল তাঁর পরিবার। এই অঞ্চলে নারী শিক্ষার কোন সুযোগ ছিল না বললেই চলে। নারী শিক্ষার সুযোগ না থাকায় এক মাত্র কন্যা সন্তানকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে পারেন নি। এটা তাঁর মনকে ভীষণভাবে ব্যথিত করে। সেই ব্যথিত মন থেকেই ১৯৬০ সালে গ্রামের শিক্ষানুরাগী মানুষদের সাথে আলোচনা করে সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্ঠায় নিজ অর্থ ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করেন কুণ্ডেশ্বরী বালিকা বিদ্যামন্দির ও ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কুণ্ডেশ্বরী  বালিকা মহাবিদ্যালয়। সে থেকে আজ অব্দি নারী শিক্ষার আলোক বর্তিকা প্রজ্জ্বলন করে আবাসিক সুবিধা সম্পন্ন, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক মন্ডল ও নিরাপদ মনোমুগ্ধকর শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলে কুণ্ডেশ্বরী  বালিকা মহাবিদ্যালয় আজ দেশের অন্যন্য এক নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং নারী সমাজকে যথার্থ শিক্ষিত করে গড়ে তুলে জাতীয় সম্পদ ও শক্তিকে পরিণত করতে বদ্ধ পরিকর। এরই ধারাবাহিকতায় অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে সনামধন্য অনেক ডাক্তার, প্রকৌশলী ও অন্যান্য পেশাজীবি দেশে এবং দেশের বাইরে আলোকশিখা প্রজ্জ্বলন করে যাচ্ছে।